নিউজ ডেস্কঃ বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে লোকসান দিয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে পারবে ব্যাংকগুলো। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আনতে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার সঙ্গে এবার ব্যাংকগুলো ২ দশসিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারবে। নতুন নিয়মে এখন বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠালে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা মিলবে।
বৈধ পথে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠালে আজ থেকে ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবে। আগে শুধু সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পেতো। এবার সরকারের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনার (রেমিট্যান্সে ৫ শতাংশ প্রণোদনা) সঙ্গে ব্যাংকগুলো দেবে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ডলারের সংকট কাটাতে বৈধ পথে রেমিট্যান্সের গতি বাড়ানোর জন্য এবিবি ও বাফেদা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ রোববার (২২ অক্টোবর) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা)। এর আগে গত শুক্রবার সংগঠন দুটি এক ভার্চুয়াল সভায় প্রণোদনা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে শনিবার ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ থেকে ব্যাংকগুলো প্রতি ডলারে সঙ্গে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিতে পারবে। তবে আমদানি ডলার বিক্রির দর ১১০ টাকা ৫০ পয়সা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বর্তমানে প্রবাসীদের আয়ে ব্যাংকে এক মার্কিন ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। এর ওপর সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়। এখন এক ডলারে পাচ্ছে ১১৩ টাকা ২৬ পয়সার কিছু বেশি। এখন এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো দেবে আরও ২.৫ শতাংশ বাড়তি দাম। ফলে রেমিট্যান্সের এক ডলারে মিলবে ১১৬ টাকার (রেমিট্যান্সে ৫ শতাংশ প্রণোদনা) কিছু বেশি।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই রেমিট্যান্স হাউসগুলো থেকে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডলার সংকট কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত। তাদের ধারণা, নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হবে।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ১৮.২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪.৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯৬ কোটি ডলার। এর এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ১১ অক্টোবর ছিল ২ হাজার ১০৭ কোটি ডলার। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি বা ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। গত বছরের ১৮ অক্টোবর সেই রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬১১ কোটি ২৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। গত বুধবার তা ২ হাজার ৬৬৮ কোটি ডলারে নেমেছে।
Related Post:
ফ্রিল্যান্সাররা পাবেন ৪ শতাংশ প্রণোদনা